প্রকাশিত: / বার পড়া হয়েছে
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে এবার পাট চাষে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি উৎপাদন হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া, উর্বর মাটি এবং পর্যাপ্ত খাল-বিল-নদীর কারণে কৃষকেরা এবার ভালো ফলন পেয়েছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে নাসিরনগরে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১,৩৩০ হেক্টর জমিতে। কিন্তু আবাদ হয়েছে ১,৩৩২ হেক্টর জমিতে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১২,২৯৪ বেল, কিন্তু উৎপাদন হয়েছে ১৪,৫৮৯ বেল—যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।
পাট চাষে দেশি, তোষা এবং কেনাফ জাতের বীজ ব্যবহার করেছেন কৃষকেরা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে কেনাফ জাতের পাটে, এবং এই জাত থেকেই কৃষকেরা ভালো ফলন পেয়েছেন। প্রতি একরে গড়ে ২৫ থেকে ৩০ মণ পাট উৎপাদিত হয়েছে বলে জানা গেছে। বর্তমানে প্রতি মণ পাট বিক্রি হচ্ছে ২,৮০০ থেকে ৩,৫০০ টাকায়। শুধু পাট নয়, পাটকাঠিরও ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
স্থানীয় কৃষক আজিজুর রহমান বলেন,গত ২-৩ বছর ধরে পাটের ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকেরা আবার পাট চাষে আগ্রহী হচ্ছে। যদি সরকার আমাদের আরও সহযোগিতা করে এবং বিক্রয়ের নিশ্চয়তা দেয়, তাহলে ভবিষ্যতে পাট চাষ আরও বাড়বে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইমরান হোসেন বলেন,নাসিরনগরে প্রচুর নদী, খাল ও বিল থাকায় কৃষকেরা সহজেই পাট পচাতে পারে। আমরা মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের পাট চাষে উদ্বুদ্ধ করছি এবং নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছি। এজন্যই এবার ভালো ফলন হয়েছে। এছাড়া বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকেরা দিন দিন পাট চাষে আগ্রহী হচ্ছে।
একসময় বাংলার প্রধান অর্থকরী ফসল ছিল পাট। পাট ও পাটজাত দ্রব্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করত। নাসিরনগরসহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন এলাকায় একসময় বিপুল পরিমাণ পাট উৎপাদিত হতো। দীর্ঘদিন অবহেলায় পাটচাষ কমে গেলেও সাম্প্রতিক সময়ে ভালো দাম ও অনুকূল আবহাওয়ার কারণে আবারও পাটচাষে আগ্রহ ফিরে এসেছে কৃষকদের মধ্যে।
এবারের বাম্পার ফলনে নাসিরনগরের কৃষকের মুখে হাসি ফিরেছে, তারা মনে করছেন পাটচাষ নতুন করে কৃষকের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলবে।