Friday, 06 June, 2025
Logo
বিজ্ঞাপন
যাবতীয় রড, সিমেন্ট, ইট, বালি ও কনা পাইকারি ও খুচরা বিক্রয় করা হয় ।। যোগাযোগ- মেসার্স হোসেন ব্রাদার্স/ জাকের ট্রেডার্স।। সোবান মঞ্জিল, বসুর হাট রোড, সিনেমা হলের পাশে, দাগনভুইয়া, ফেনী। প্রোপ্রাইটর জাকের হোসেন আলমগীর ০১৭১১-৯৬২৯২৫।। ০১৮৭১-৯৩০০০৮ মেসার্স কে আহাম্মদ এন্ড সন্স! পরিবেশক,বি এম, ডেল্টা ও ইউনি এল পি গ্যাস! যোগাযোগ- বসুরহাট রোড, সিনেমা হলের সামনে, দাগনভুইয়া, ফেনী- ০১৭১১-৩০৪৮৭৩, ০১৮৩৯-৩৯৭১৩০! দাগনভুইয়া ফিজিওথেরাপী সেন্টার, একটি আধুনিক বাত, ব্যথা, প্যারালাইসিস ও মুখ বাঁকা চিকিৎসা কেন্দ্র। ঠিকানা- সোবহান মঞ্জিল, বসুর হাট রোড। (সাবেক ঝর্না সিনেমা হলের পাশে)। দাগনভুইয়া, ফেনী। 01818-019684, 01721-910110

মৃত্যু ঝুঁকিতে পাহাড়ের ঢালে লাখো রোহিঙ্গা "দেড় হাজার ঘর ক্ষতিগ্রস্ত"

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: / বার পড়া হয়েছে


ছবি - সংগৃহীত

ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে পানিতে ডুবে গেছে চলাচলের রাস্তা। বেড়েছে ভূমিধসের ঝুঁকি। গত দুই দিনের বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ার আঘাতে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে ৫৩টি স্থানে ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ার আঘাতে ১ হাজার ৪০০টির বেশি রোহিঙ্গা ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মাটির দেয়াল ধসে একজন রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে। বজ্রপাতে আহত হয়েছেন একই পরিবারের ৫ জনসহ মোট ১১ জন।

রবিবার রাত ৯টার দিকে ২০ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বøক-৮-এ বজ্রপাতে একই পরিবারের পাঁচজন গুরুতর আহত হন। তারা হলেন আনোয়ার বেগম (৪৭), জিয়াউর রহমান (২১), আয়েশা বিবি (১৫), সোনাউল্লাহ (২৮) ও হুসনে আরা (২৪)। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে ক্যাম্প-২০-তে এনজিও ফ্রেন্ডশিপ পরিচালিত হাসপাতালে ভর্তি করেন। ২ জুন মধ্যরাতে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মাটির দেয়াল চাপা পড়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে এক শিশু। নিহত যুবকের নাম মোহাম্মদ আয়াছ (২০)। তিনি ক্যাম্প-২ ইস্টের ডি-৩ বøকের বাসিন্দা আবুল ফয়েজের ছেলে। আহত শিশুর নাম কামাল উদ্দিন (১২)। সে একই বøকের বাসিন্দা জামাল উদ্দিনের ছেলে। তারা নতুন করে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গা। যারা এখনো বায়োমেট্রিক কার্ড সংগ্রহ করেনি। আয়াছ তার বোনের বাড়িতে অস্থায়ীভাবে বসবাস করছিল। উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আরিফ হোসাইন মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

২ জুন সোমবার বিকেলে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ইউএনএইচসিআর কক্সবাজার শাখা থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। ইউএনএইচসিআর অন্তর্ র্বতীকালীন প্রতিনিধি জুলিয়েট মুরেকেইসনি বলেন, মৌসুমি বৃষ্টিপাতের কারণে ঘনবসতিপূর্ণ আশ্রয় শিবির বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আর ঝড়ো হাওয়া বাঁশ ও ত্রিপল দিয়ে তৈরি ঘরগুলোকে আরও দুর্বল করে তুলছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে পরিবারগুলোকে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরে স্বেচ্ছাসেবকেরা সহায়তা করছেন। কিন্তু আশ্রয়ের জন্য আমাদের আরও জায়গা দরকার। বর্ষার আগেই শরণার্থী শিবিরে আশ্রয়ের জায়গা কমে গিয়েছিল। বিশেষ করে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতার শিকার হয়ে গত কয়েক মাসে হাজার হাজার রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছেন। অনেকেই আগে পালিয়ে আসা আত্মীয়স্বজনের ঘরে আশ্রয় নিয়েছেন। যাঁরা নিজেরাই নিজেদের ঘরকে শুকনা রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

কক্সবাজারে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি গোয়েন লুইস বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং আশপাশের বাংলাদেশী জনগণ এমন একটি এলাকায় বাস করছেন, যেখানে বন্যা, ভূমিধস, ঘূর্ণিঝড় ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি সব সময় থাকে। এই দুর্যোগের প্রস্ততি নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এ বছর অর্থের অভাবে প্রয়োজনীয় প্রস্ততিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। ২০২৫ সালে মানবিক সহায়তাকারী সংস্থাগুলো প্রায় ১৪ দশমিক ৮ লাখ মানুষকে সহায়তা করতে ৯৩ দশমিক ৪ কোটি মার্কিন ডলার তহবিল চেয়েছে। যার মধ্যে রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং আশপাশের বাংলাদেশি জনগণ অন্তর্ভুক্ত। বছরের মাঝপথে পৌঁছে যাওয়া সত্বেও এখনো ২০ শতাংশের কম অর্থায়ন এসেছে। আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করব। কিন্তু এই কঠিন সময়ে আমরা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অবহেলা করতে পারিনা। এই দুর্দশাগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর সহায়তার জন্য আমরা জরুরীভাবে দাতাদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান করেছি।

এদিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নতুন করে আতঙ্ক বাড়াচ্ছে বজ্রপাত। যা রীতিমতো জীবনের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরের কয়েক লাখ রোহিঙ্গা। পাহাড়ের ঢালে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে বসবাস করায় এই বৃষ্টি আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করেছে। শিবিরের শেডগুলোতে ঢুকে পড়েছে বৃষ্টির পানি ও পাহাড়ি ঢল। গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া টানা বর্ষণে শিবিরে বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বর্ষা মৌসুম শুরু হলেই রোহিঙ্গারা বন্যা, পাহাড়ি ঢল এবং বজ্রপাতের মতো দুর্যোগে বারবার বিপদের মুখোমুখি হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, টানা বৃষ্টিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে। পাহাড়ের ঢালে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ক্যাম্পগুলো পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্ট ক্যাম্প ইনচার্জ ও সেবাদানকারী সংস্থাগুলো ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করছে। পাশাপাশি, রোহিঙ্গাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

Share

আরো খবর


সর্বাধিক পঠিত