প্রকাশিত: / বার পড়া হয়েছে
১৯৭১ সালে যুদ্ধ পরবর্তী সময় হতে ভারত বাংলাদেশের উপর বিভিন্ন ক্ষেত্রে আগ্রাশন চালিয়ে আসছে, কারন ভারতকে আমরা আমাদের স্বাধীনতার পরম সহযোগী হিসাবে মাথায় তুলেছি, কিন্তু স্বাধীনতা যুদ্ধে কেন, কোন স্বার্থে আমাদের সহযোগিতা করেছে তা অনেক টা স্পষ্ট হলেও বিগত সরকার গুলো তা জনগনকে বুজতে দেয় নি।
ভারত পরম বন্ধুত্বের মুখোশে চরম আগ্রাসনের ভূমিকায় অবর্তীর্ন হলেও আমাদের প্রতিবাদের কন্ঠ সোচ্চার হয়নি। যখনি আওয়াজ তোলার চেষ্টা হয়েছে ভারতীয় দালাল চক্র গুম, খুন আর হত্যার মাধ্যমে তা স্তব্ধ করে দিয়েছে, তার জলন্ত উদাহরণ বুয়েটের আবরার।
যখন যে ক্ষমতায় ছিল ভারতের পদ লেহন করে টিকে থাকার চেষ্টা করেছিল। বিশেষ করে বিগত ১৫ বছরে ভারত বাংলাদেশে তাদের একটি আগ্রাসন বলয় তৈরি করেছে, যে বলয়ের প্রথম টুলস ছিল পরাজিত আওয়ামী সরকার। যারা জনগনের ম্যান্ডেট ছাড়া ভারতের সহযোগিতায় ১৫ টি বছর অবৈধ ভাবে বাংলাদেশের মানুষকে শোষণ করেছে, বিনিময়ে ভারত যা চেয়েছে যেভাবে চেয়েছে সে ভাবেই পেয়েছে।
আমাদের কে বুজানো হয়েছে ভারত আমাদের অকৃত্রিম বন্ধু, তাদের সাথে স্বামী-স্ত্রী বা রক্তের সম্পর্ক। এই সম্পর্ক টি যে শুধু আওয়ামী সরকারের সাথে ছিল বাংলাদেশের জনগনের সাথে নয় তা ভারত টের পেয়েছিল নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশে আসার পর।
মোদির আগমনকে কেন্দ্র করে সরকার যে ভাবে সাধারন জনগন আর মসজিদ মাদ্রাসায় হামলে পড়েছিল তা সকলেই জানেন, সেদিন মসজিদ মাদ্রাসা আর আলেম ওলামাদের কেন টার্গেট করেছিল পলাতক শেখ হাসিনা সরকার? তার একটি কারন ছিল মোদিকে দেখানো যে শেখ হাসিনা যদি ক্ষমতায় না থাকে তাহলে বাংলাদেশ সাশন করবে মৌলবাদীরা, ২ য় টি ছিল মোদিকে বুজানো শেখ হাসিনা সরকারই পারে মৌলবাদীদের ধমন করতে।
শেখ হাসিনার খুনি চরিত্রের কৃতিত্ব দেখাতে গিয়ে কত গুলো প্রান অকালে চলে গেল আর মসজিদ মাদ্রাসায় হামলা করে ধর্মপ্রাণ জনতার মনে কতটা আঘাত দিয়েছে তার বিস্ফোরণ ৫ ই আগষ্ট দেখল বিশ্ববাসী।
আর ২য় টুলস হিসাবে উল্লেখযোগ্য ইসকন, এই ইসকনের দেহ বাংলাদেশে হলেও তাদের আত্বা কিন্তু ভারতে। তারা মনে করে বাংলাদেশ কে ভারতই পরিচালনা করছে, এবং বাংলাদেশ ভারতের একটি প্রদেশ, শেখ হাসিনা ছিল সেই প্রদেশের পুতুল বা ডামি সরকার, তার উদাহরন হিসাবে বিগত ২৪ শের সাজানে নির্বাচনে ভারতের দেয়া প্রার্থীদের নিলর্জ আত্মপ্রকাশই যথেষ্ট।
এছাড়া বাংলাদেশের নির্বাচন বিষয়ে সুষমা সরাজ, প্রনব মুখার্জি উলঙ্গ কান্ড তো কারো অজানা নয়।
বিগত ১৫ বছর এই ইসকন নামক উগ্র সংঘটনকে বিভিন্ন ভাবে স্বৈরাচার রক্ষার ট্রেনিং দেয়া হয়েছে, যার নেতৃত্বে ছিল নওফেল গং রা, শেখ হাসিনা পতনের পর বিভিন্ন টুলস ব্যাবহার করে যখন প্রতি-বিপ্লবের চেষ্টা ব্যার্থ হয়, তখন ইসকন কে মাঠে নামিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করে প্রকাশ্যে দিবালোকে রাষ্ট পক্ষের আইনজীবী কে হত্যা করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগিয়ে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার যে সাজানো পরিকল্পনা এঁটেছিল তা এদেশের বিপ্লবী সরকার বা জনতা সহজ সমিকরনে বুজতে পারবে তা ভারত অনুমান করতে পারে নি।
তাই হত্যার বিপরীতে ধৈর্য আর জাতীয় ঐক্যের ফর্মুলা দিয়ে ইসকন ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে ভারতের গালে যে সম্প্রীতির চড় ড. ইউনুস সরকার দিল তা হজম করতে না পেরে, একজন খুনি, বলৎকার কারী পুচকে দেশদ্রোহী বহিস্কৃত ইসকন নেতা চিম্নয় দাস ইসূতে পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে হুংকার ছাড়া হল যা ভারতের ইতিহাসে নজির বিহীন হয়ে থাকবে।
ভারত মনে করেছিল বাংলাদেশ এখনো ৫ ই আগষ্টের পূর্বের কুটনীতিতে চলছে, বড় দেশ হিসাবে হুমকি ধামকি ভয় ভীতি দেখিয়ে আগের মত গোলামে পরিণত করে স্বার্থ হাসিল করবে।
এটা যে বিপ্লবের সরকার তা জানলে ও মানতে কষ্ট হচ্ছে, যার জন্য এই সরকার কে স্বীকৃতি দিতে গড়িমসি করছে।
ভারত কে বুজতে হবে বাংলাদেশের মানুষ অতীতের গোলামীর জিঞ্জির হতে বের হয়ে নিজের অধিকার আদায় করতে শিখে গেছে, যার যথেষ্ট উদাহরণ ৫ ই আগষ্ট, এই বাস্তবতা কে স্বিকার করেই আগামীর সম্পর্ক ও করনীয় ঠিক করতে হবে। না হলে নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ, শ্রীলংকার মত প্রতিবেশী হিসাবে বাংলাদেশ কে ও হারাতে হবে, যা ভারতের জন্য মোটেই সুখকর হবে না।
সম্পর্কের লাভ-ক্ষতি:
ভারতের সাথে সম্পর্কের লাভের ফসল কোন দিন গোলায় তুলতে পারেনি বাংলাদেশ। এটা ভারসাম্য হীন সম্পর্কের পরিনতি। তাই অসম সম্পর্কে বাংলাদেশের হারানোর তেমন কিছু না থাকলেও ভারত অনেক কিছুই হারাবে। যেমন সেভেন সিস্টার্স, ১ হাজার ৬৩ কোটি ( ১০.৬৩ বিলিয়ন ২২- ২৩ অর্থ বছরের হিসাব মোতাবেক) রপ্তানি বানিজ্য। চিন পাকিস্তানের প্রভাব বৃদ্ধি, ভারতের চিকিৎসা ও পর্যটন ব্যাবসায় ধস, সীমান্তে উত্তেজনা সহ নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত হয়ে ভারত বিভাজনের সম্ভাবনা জোরালো হতে পারে।
মোঃ ফখরুল ইসলাম